ডেক্স রিপোর্ট
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার মহসিন খান এর বিরুদ্ধে। তাঁর রয়েছে নামে বেনামে বাড়ি গাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পরও কিছুই হচ্ছেনা তাঁর। নিত্য নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে। মহসিন বিভিন্ন মানুষের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন তার হাত অনেক শক্তিশালী। সাংবাদিকদের নাকি তার ক্ষমতা সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। পত্রিকায় নিউজ করে তার কিছুই নাকি করা যাবে না। অফিসের টেলিফোনে যোগাযোগ করে মন্তব্য জানতে চাইলে উল্টো প্রতিবেদককে মামলার হুমকি প্রদান করেন। মহসিন বলেন, আপনারা যত পারেন নিউজ করেন আগামী বৃহস্পতিবার আপনাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করবো। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আমার কয়েক ডজন বন্ধু বান্ধৰ আছে কিছুই করতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন। এলাকাবাসির অভিযোগ যে মানুষটির পরিবারে এক সময় ঠিকমতো তিন বেলা খাবার জুটাতে হিমশিম খেতে হত, সেই অবস্থা মাত্র দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আমুল পরিবর্তনে লেগেছে যাদুর ছোঁয়া। এ পরিবর্তন দেখে লাধারণের নজর কারে। কিছু কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীদের কারণে দুর্নাম হয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের, এবং লাভবান হয় কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী। তাদেরই একজন কাষ্টমসের কমিশনার মহসিন খান। সে চলনে বলনে রাজা বাদশা। তাঁর রাজপ্রাসাদের মত আলিশান বাড়ি দেখতে আসেন আশেপাশের লোকজন। বিদেশি স্টাইলে চারিপাশে প্রাচীর করা পুকুর লাগোয়া তার তিন তলা বিশিষ্ট বাড়ীসহ মহসিন খান অন্তত ৫ কোটি টাকার সম্পদ কিনে ফেলে রেখেছেন নিজ গ্রামে। কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন বাড়ি তৈরিতে অথচ সরেজমিনে গিয়ে বাড়িতে একজন মানুষকেও পাওয়া গেলোনা। তবে কথা হয় মহসিন খানের ছোট কালের বন্ধু সেলিমের সাথে, একসাথে এসএসসি পর্যন্ত লেখা পড়া করেছেন তারা। তিনি জানালেন মহসিন ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র। এক সময় অর্থের অভাবে লেখা পড়া চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব ছিল। নিজ ভাইয়েরা ছিলেন তার লেখা পড়ার বিরুদ্ধে কারণ তারা মাঠে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করবে আর সে স্কুলে গিয়ে আরাম করবে সেটা তাদের পছন্দ ছিলো না। বাবাও ছিলেন সেই কাতারে। যেখানে কোন দেশ বিভাগের আগে ব্রিটিশ আমলে এদেশে
মতে বেঁচে থাকা দায় সেখানে লেখা পড়া তো অনেক দূরের কথা। কঠিন সময় যাচ্ছিল তার ঠিক সেই সময় পাশে দেবদূত হয়ে দাড়ালেন সুবল মেম্বার। বললেন চিন্তা করোনা এখন থেকে লেখা পড়ার যত খরচ সব আমি দেব। তিনি সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করলেন মহসিনকে তার খরচে ভালো মার্কস নিয়ে এসএসসি পাশও করলেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তিনি বর্তমানে কাষ্টমস ভ্যাট ও শুল্ক গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত। বিগত কয়েক বছর আগে বাবা দুনিয়া ত্যাগ করলেও মা এখনো জীবিত। তাঁর সহদরেরা মাঝে মাঝে ভ্যান চালায় ও মানুষের বাড়িতে এখনো দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করে। একমাত্র বোনকে বিয়ে দিয়েছেন একই গ্রামে। তাঁর বোন জামাইও দিন মজুর বর্তমান অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। এলাকার মানুষের অভিযোগ মহসিন খানের কারণে জমির দাম অনেক বেড়ে গেছে। জমি বিক্রির কথা শুনলেই উচ্চ মূল্য দিয়ে ক্রয় করেন মহসিন খান। তাঁর এতো টাকা কোথেকে এলো জানিনা মাঝে মাঝে একেকদিন একেক গাড়ি নিয়ে এলাকায় আসে। তাকে দেখলে মনে হয় সে কাষ্টমসে চাকরি নেওয়ার পর হতে কোন টাকার মেশিন হাতে পেয়েছে। অথচ এই দপ্তরটি সৃষ্টি হয়েছিল দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। ইতিহাস থেকে জানা যায়,
কোন কাস্টমস কালেক্টর (বর্তমান কমিশনার) পদ ছিল না। কোলকাতা কাস্টম হাউসে কালেক্টর পদ থাকতো। কোলকাতা কালেক্টর এর নিয়ন্ত্রনে ছিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, তখন এদেশের বড় কাস্টম হাউস তথা ঈযরাদার পদে থাকতেন মাত্র একজন ডেপুটি কালেক্টর তিনিই চালাতেন সমগ্র কাস্টমস কর্মকান্ড। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট বৃটিশ থেকে ভাগ হয়ে পাকিস্তান হয়। ভাগ হওয়ার সময় কোলকাতা কাস্টমস কালেক্টর ছিলেন বি সি দে নামক ভদ্রলোক। ইতিহাস থেকে জানা যায় সে সময় ১৮ আগস্ট ১৯৪৭ সালে কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম কালেক্টরে পদস্থ হন এ ই রাইট। পাকিস্তান হওয়ার পর Chittagong Custom house এ কালেক্টর পদে আবারো তাকেই পদস্থ করা হয়েছিলো। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন পরবর্তী দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পিও অর্ডার তথা ৭৬/৭২ এ গঠিত হয়েছিলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তার অধীনেই সৃষ্টি হয়েছিলো কাস্টমস ডিপার্টমেন্ট। ১ জুলাই ৯৫ কালেক্টর পদ পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ হয়েছিলো কমিশনার। জানা যায়। প্রথম কমিশনার ছিলেন আজিজুর রহমান এমনকি (শেষ কালেক্টরও ছিলেন তিনি)। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত কালেক্টর থাকাকালীন সময় কালেক্টর এর পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। জানা যায় অবসর পরবর্তী সময়ে তিনি থাকার জন্য