নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জুলাই বিপ্লবে হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয় সোলাইমান হক নামের এক বছরের একটি শিশু। এ সময় সন্ত্রাসীরা অসুস্থ ঐ শিশুটিকে হাসপাতালে যেতে না দিয়ে উল্টো মারা গেছে ভেবে রাস্তার উপর ফেলে রেখে যায়। এ নিদারুণ ঘটনায় চট্টগ্রামের সাবেক ৭ কাউন্সিলরসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে আসামী করে মোট ২১১ এর বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
গত ১৭ই সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মোহাম্মদ জসিম নামক এক ব্যক্তি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী মো. জুনাইদ উল্লাহ। এতে চট্টগ্রামের সাবেক প্রভাবশালী নারী কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজীসহ আরও ৬ চসিক কাউন্সিলরকে আসামী করা হয়। মামলায় মোট আসামী ২১১ জন।
মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন চসিকের সাবেক ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, সাবেক ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশিদ, সাবেক ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পেয়ার মোহাম্মদ, সাবেক ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহীদুল আলম, সাবেক ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল হক ও সাবেক ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেলিম উল্লাহ বাচ্চুসহ মোট ২১১জন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬শে জুলাই চট্টগ্রামের চান্দগাওয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সোলাইমান নামক এক বছরের একটি শিশুকে হাসপাতাল নিতে রওয়ানা দেন মামলার বাদী জসিম উদ্দিন। সে সময় শিশুটির বাবা রিয়াজুদ্দিন বাজারে কাজে আটকা পড়লে শিশুটিকে নিয়ে রওয়ানা দেন তিনি। কিন্তু পথিমধ্যে আন্দোলন চলাকালীন চান্দগাওয়ের কালামিয়া স্কুলের সামনে ছাত্র জনতার উপর হামলাকালে শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সন্ত্রাসীরা উল্টো তাকে হাসপাতালে যেতে না দিয়ে রাস্তায় রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে একটি ফার্মেসীতে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি অবনতি হলে চমেক হাসপাতালে জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি করান।
মামলার বাদী বলেন, এ মামলা না করতে আমাকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আসামীরা। তখন আমার মনে হয়েছিল আমি মনে হয় সোলাইমানকে আর বাচাতে পারবো না। আমি তার বাবার কাছে কি জবাব দিতাম। আমি আজও ভুলতে পারিনি সেই ভয়াবহ সময়ের কথা। আমি চাই আসামীদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি হোক।
বাদীর আইনজীবী জুনাইদ উল্লাহ জানান, এ মামলায় শুধু একটি মাছুম বাচ্চার উপর ঘটে যাওয়া ঘটনাকেই না, ছাত্র জনতার উপর হামলার ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে। এ সময় তিনি ন্যায় বিচার পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।