ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব এর সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। নিহত ভিকটিম নেছার আহমেদ তোতা গত ২০০৩ সালে দুবাই থেকে দেশে ফেরত আসেন। নেছার আহমেদ তোতা এর নিকট থেকে একই এলাকার বাসিন্দা এজাহার মিয়া অনেক দিন পূর্বে পাঁচ হাজার টাকা ধার নেয়। নেছার আহমেদ তোতা দেশে ফেরত আসার পর তার পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে এজাহার মিয়াকে একাধিকবার চাপ প্রয়োগ করলে এজাহার মিয়া তাকে টাকা প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। নেছার আহমেদ তোতা এবং এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ল্যাডা নাছির এর মধ্যে পূর্ব থেকে শত্রুতা চলে আসছিল। তথাপি, পর্যায়ে সন্ত্রাসী নাছির এজাহার মিয়ার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে দিবে বলে ভিকটিম নেছার আহমেদ তোতাকে আশ্বস্ত করে কৌশলে ভিকটিমের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ তৈরি করে। পরবর্তীতে টাকা উদ্ধারের জন্য গত ০১ নভেম্বর ২০০৩ ইং তারিখে ল্যাডা নাছির এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা ভিকটিমকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ভিকটিম বাড়িতে ফিরে না আসায় তার স্ত্রী সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন এবং পর দিন ০২ নভেম্বর ২০০৩ ইং তারিখে লোক মারফত জানতে পারেন যে, দক্ষিণ রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় একটি পাহাড়ের পাদদেশে সড়কের উপর অজ্ঞাতনামা একটি মৃতদেহ পড়ে আছে। পরবর্তীতে ভিকটিমের স্ত্রী বর্ণিত স্থানে উপস্থিত হয়ে অজ্ঞাতনামা গলাকাটা লাশটি তার স্বামীর মৃতদেহ মর্মে সনাক্ত করেন। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানায় ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০২ (১১), তারিখ- ০২/১১/২০০৩ ইং, ধারা- ৩০২/৩৪, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০। উক্ত ঘটনায় ফটিকছড়ি থানা পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ১৪ মে ২০০৪ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পুলিশ প্রতিবেদন এবং মামলার সাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত গত ০৮ মার্চ ২০২১ইং তারিখে মামলার ৯ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড সহ ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ড প্রদান করেন। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, সূত্রে বর্ণিত মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি বাবুল চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানাধীন একটি বহুতল ভবন এর সামনে পাকা রাস্তার উপর অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ২১ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে আনুমানিক ২০২০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি বাবুল (৪২), পিতা- মৃত মোজাহার মিয়া প্রকাশ এজাহার মিয়া প্রকাশ ভুলক্যা, গ্রাম- শাহনগর, থানা- ফটিকছড়ি, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করতঃ বর্ণিত মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাস ফেরত নেছার আহমেদ তোতা’কে হত্যা করে এবং মামলা রুজু হওয়ার পর হতে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে সে নিজ এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।