সুব্রত বাবু
সিক্রেট রিপোর্টার
বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলার ১৫ টি উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার ৯টি উপজেলা মিলে ২৪ টি উপজেলার ছোট বড় সব খামারে বেড়েছে গরু-মহিষ-ছাগল চুরি ডাকাতির হিড়িক।
বিগত এক যুগ ধরে রাত নামলেই দুর্ধর্ষ ডাকাত দল আতঙ্কে থাকে দুই জেলার ১০ হাজারের অধিক কৃষক ও খামারি।
এসব এলাকায় ৪০ ডাকাত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে।
মাঝে মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুটিকয়েক আটক হলেও চুরি, ডাকাতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেনা কেউ।
ডাকাতের কবলে খামারিদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন গবাদি পশু হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেক দরিদ্র কৃষকের পরিবার।
কিন্তু পুলিশের অভিযানে গরুসহ একাধিক চোর আটক হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে অধরা মূলহোতা ও গডফাদাররা।
তাই থামছেই না গরু চুরি-ডাকাতি। সব সময় অধরা থেকে যাচ্ছে বিশাল একটি ডাকাত বাহিনী।
অনুসন্ধানী তথ্য বলছে, দুই জেলা জুড়ে ৪০ সদস্যের একটি দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের বাহিনী রয়েছে।
এটি কক্সবাজারের চকরিয়া ভিত্তিক এই ডাকাত দলে রয়েছে বিভিন্ন মামলার আসামি ও অপরাধীরা।
যাদের আতঙ্কে বৃহত্তম চট্টগ্রামের ২৪ উপজেলার হাজার হাজার খামারি। তাদের রয়েছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ।
যে গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রামের মিরসরাই ও চকরিয়া উপজেলার ডাকাত সর্দার।
সম্প্রতি, কক্সবাজারে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক গরু চোরেরা অকপটে স্বীকারও করেছে,
দুর্ধর্ষ ডাকাত বাহিনীর পিছনে রয়েছে খোদ জনপ্রতিনিধিরা। অনেক চেয়ারম্যান গরু চুরির কাজে জড়িত।
খুব অবাক করা বিষয়, জনগণের হর্তাকর্তা সেজে জনপ্রতিনিধিরাই গোয়ালঘরের সর্বনাশ করে যাচ্ছেন।
প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে আরো উঠে এসেছে,
যে জনপ্রতিনিধিরা গরু চুরিতে লিপ্ত সেই গরু চোর জনপ্রতিনিধির পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন আরও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। যাদের কখনো সন্দেহজনক ভাবে আঁচ করা কঠিন।
যদিও এসব প্রভাবশালীদের নাম কোথাও প্রকাশ হয়নি। বার বার তারা আড়ালে থেকে যাচ্ছেন।
কারণ এরা এতই প্রভাবশালী বা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা যে, তারা আইন নিয়ে খেলা করেন প্রতিনিয়ত।
অথচ তাদের নাম বলাতে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও থ বনে গিয়েছেন।
এসব ডাকাত দলের পিছনে আশ্রয় প্রশ্রয় ও আইনি সহযোগিতায় রয়েছেন এক শ্রেণির অসাধু শাসনকর্তা।
যে কর্তাদের বাসায় ডাকাত দলের সদস্যরা নিয়মিত তাজা দেশী গরুর মাংস, ছাগল ও হরিণের মাংস পাঠিয়ে থাকেন বলেও সূত্রে জানা গেছে।
বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় চুরি ডাকাতি করতে পারদর্শী ৪০ সদস্যের একটি ভয়ঙ্কর ডাকাত দল পুরো বছর জুড়ে সক্রিয় থাকেন।
এরা কখনও প্রাইভেকট কারে, কখনও নোহা গাড়িতে, কখনও হাইস, কখনও মাইক্রোবাস, কখনও মিনি পিকআপ,
কখনো ট্রাকে করে ডাকাতি করেন।
এ গ্রুপে রয়েছে একাধিক মামলার ভয়ানক সব আসামি। যাদের নামে ডজন ডজন মামলা রয়েছে।
এ ডাকাত দলকে খামার ঘরের প্রহরীরা দেখলেও ডাকাত দল পালিয়ে যান না।
বরং সরাসরি ডাকাতি করে বসেন। কোথাও বাঁধা ফেলে গুলি চালাতে এক মিনিটও সময় নেন না।
না দেখলে চুরি বলে প্রচার পায় বেশি। তবে অনেক খামারের প্রহরীর সাথে তাদের সোর্সের যোগাযোগ।
তাদের রয়েছে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সু-সজ্জিত বাহিনী। এরা ডাকাতি করা গবাদিপশু পরিবহনে ব্যবহার করেন কয়েকটি বিশেষায়িত যানবাহন।
যে সব যানবাহনে একাধিক গরু উঠালেও সহজেই বুঝার উপায় নেই যে, এটি গরু পরিবহনের কোন গাড়ি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ বছরে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই, সীতাকুণ্ড,
ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ,
লোহাগাড়া, সন্দ্বীপ,
বোয়ালখালি, আনোয়ারা, বাঁশখালী, কর্ণফুলী উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার