ক্রাইম রিপোর্টার রাসেল আহমেদ রংপুর।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের গত ১০ নভেম্বর আফরিন খাতুন নামের এক গৃহবধূর রহস্যময় আত্মাহত্যার ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের নানি মোঃ নোরেজা বেগম।গত মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত – ১- এ আত্মাহত্যার প্ররোচনায় অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করা হয়।বিজ্ঞ আদালত নালিশটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুসহ মামলাটি সিআইডি তদন্তের আদেশ দেন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকনুরজ্জামান রোকন বিষয়টির এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মোঃ মুরাদ হাসানের সঙ্গে আফরিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মুরাদ যৌতুকের দাবিতে আফরিনের উপর অত্যাচার চালান। বিভিন্ন সময় আফরিন তার বাবা – মা থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা এনে দেন। কিন্তু আরও যৌতুকের দাবিতে আফরিনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।ঘটনার ৯ দিন আগে মুরাদ আফরিনের কাছে ৫০ হাজার টাকা এবং একটা অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন দাবি করেন। এনিয়ে মুরাদের সঙ্গে আফরিনের ঝগড়া মুরাদ। আফরিন ঘটনাটি নানির নিকট বিস্তারিত খুলে বলেন।আফরিনের নানি ঢাকায় গিয়ে তার পিতামাতার কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ফোন এনে দেবেন এ আশ্বাসে সেদিন তাকে বুঝিয়ে মুরাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার দিন গত ১০ নভেম্বর দুপুরে আফরিন মুরাদের মোবাইল থেকে তার নানির মোবাইলে কল দিয়ে টাকা ও মোবাইল ফোনের জন্য তার উপর শারীরিক নির্যাতনের কথা বর্ণনা করেন।কথা বলার সময় মুরাদ মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে সংযোগ কেটে দিন।কিন্তু সন্ধ্যায় মুরাদ ফোন করে নানি নোরেজা বেগমকে জানান আফরিন গালায় ফাঁস দিয়ে আত্মাহত্যা করেছেন। এ খবরে পরেরদিন ভোরে আফরিনের বাবা – মা নানি মিঠাপুকুর থানায় এসে দেখেন আফরিনের মরদেহ একটি গাড়িতে শায়োনো আছে। তখন মরদেহ ঢাকা কাপড় সরিয়ে সরিয়ে তারা দেখতে পান আফরিনের শরীরের বিভিন্ন জাগায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আফরিনকে হত্যার অভিযোগ মিঠাপুকুর থানায় গেলে তারা অভিযোগ না নিয়ে অপমৃত্যু মামলা করে পড়ে বাধ্য হয়ে নানি নোরেজা বেগম রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত – ১ এ মামলা দায়ের করেন। বাদী নোরেজা বেগম বলেন, আমরা অসহায় গরিব মানুষ। আফরিনকে ওরা হত্যা করেছে, আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। সিআইডি সঠিকভাবে তদন্ত করে হত্যার রহস্য বের করবে এটাই প্রত্যাশা।