বিশেষ প্রতিনিধি
আগস্ট বিপ্লবের পর বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালায় তাদের ব্যবস্থাপনা কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মধ্যে নতুন গভর্নিংবডি সিসিএন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির কর্তৃত্ব নিয়েছে, যেখানে পুরানো পরিচালকদের অনেকেই সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে কার্যত সক্রিয় নন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। নতুন রেজিস্ট্রার কোষাধ্যক্ষ ও পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়োগ করা হলেও এখন পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, শুধুমাত্র নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে না বরং অত্যাবশ্যকীয় সেবা, যেমন বিদেশে অধ্যায়ন বা চাকরির উদ্দেশ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র যাচাইকরণের জন্য গুরুতর অসহযোগিতা ও হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অনেক শিক্ষার্থী ‘এই প্রতিবেদককে জানান।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা এবং বিভিন্ন ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা সিসিএন ইউনিভার্সিটির পাঠানো ভুল প্রতিবেদনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পরিচয় প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক, এমন একজন শিক্ষার্থী বলেছেন যে, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ভুক্ত একটি দেশে বসবাস করেন এবং উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজনে তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে, সিসিএন ইউনিভার্সিটি একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যা সেই দেশে তার অধ্যয়নের বিষয়টি হুমকির মুখে পড়েছে। যদিও একাডেমিক সার্টিফিকেট গুলি ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথভাবে যাচাই এবং সত্যায়িত করা হয়েছিল।
অন্য একজন বাংলাদেশীও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, যিনি কানাডায় এক্সপ্রেস এন্ট্রি মাইগ্রেশনের জন্য সিসিএন ইউনিভার্সিটির ডিগ্রির কানাডিয়ান স্বীকৃতিপত্র প্রক্রিয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সিসিএন ইউনিভার্সিটির ভুল রিপোর্ট তাকে যারপরনাই জটিল সমস্যায় ফেলেছে।
উল্লেখ্য যে, বিদেশে অবস্থানরত ভুক্তভোগীদের পক্ষে তাদের আত্মীয়-স্বজন বা অনুমোদিত বাক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে, তারা মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয় যে অতীতের রেকর্ডগুনি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে যাচাই করা হবে। তবে পূর্ববর্তী পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, ভর্তি-বাণিজ্য ও নিয়োগ বাণিজ্যের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এবং তৎসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অনেক পুরোনো নিবন্ধন বা সার্টিফিকেট স্থগিত রাখা হয়েছে নতুবা বাতিল করা হয়েছে।
এমতবস্থার অনেক দিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা বা চাকরির জন্য বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি তাদের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি পেশাগত জীবিকা মারাত্মক স্বমকির মুখে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এই স্পর্শকাতর বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিচ্ছে তা জানতে রেজিস্ট্রার অফিসে যোগাযোগ করা হলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।