মোঃ নাসির উদ্দিন রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহীতে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ওই বাড়িতে হামলা চালানো হয়। পরিবারের সদস্যদের মারধরের পর পেট্রোল ঢেলে বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওই বিএনপি নেতা।
আর এ ঘটনার দায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের ওপরেই চাপিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী বিএনপি নেতার নাম রুহুল আমিন বাবলু। তিনি নগরের রাজপাড়া থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। নগরের বাকির মোড় এলাকায় তার বাড়ি। বাবলু রাজপাড়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মহানগর যুবদল সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে রুহুল আমিন জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে নিজ বাড়ির সামনে তিনি এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন। মামলা, হামলায় জর্জরিত। আওয়ামী লীগ ও পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতনে তিনি রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। বর্তমান এই সময়ে এসেও তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে। তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সকলকে মেরে ফেলার জন্যই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
বিএনপি নেতা বাবলু জানান, কিছু দিন আগে রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়। এতে আওয়ামী লীগের কিছু এজেন্ট স্থান পায়। তাদের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় বিএনপির কিছু পদধারী নেতা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে তাঁর বাসায় অতর্কিতভাবে ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল নিয়ে হামলা চালান। তারা ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি ও পাইপ নিয়ে আসেন। তারা পরিবারের সবাইকে পিটিয়ে আহত করে। লুটপাট চালায় এবং এরপর বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
হামলাকারীরা তাঁর বাড়ির এসি, মোটরসাইকেল ও বাড়ির সব আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। হামলার সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি রাজপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মামলা করার জন্য।
এতে আসামি হিসেবে রাজপাড়া থানা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুরাদ পারভেজ পিন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন, তুহিন, নাঈম ও খিচ্চুসহ মোট সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানা বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রুহুল আমিনের সঙ্গে আমার দলীয় দ্বন্দ্ব আছে। কিন্তু তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শুনতে পাচ্ছি যে তার বাড়ির কাছের ছেলেপিলেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার বাড়ি তো দূরে। এখন কিছু না করেও আমার নাম চলে আসছে। আমার আর কিচ্ছু বলার নাই।’
রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ‘মহানগর কমিটির জরুরি মিটিংয়ে আছি। এই বিষয়ে আমি পরে কথা বলব।’
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রুহুল আমিন একটা অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে সেটি তিনি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে নিষেধ করেছেন। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে নাকি আবার এজাহার দেবেন। তিনি এজাহার দিলে মামলা হবে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।