স্টাফ রিপোর্টার-তাহমিদ খান
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যম এবং নির্যাতিত ভিক্টিমদের সঙ্গে নিয়ে কুখ্যাত টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন। একসময় যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম নিদর্শন দেখা যেত, আজ সেখানে শুধুই ধ্বংসস্তূপ পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অমানবিক নির্যাতনের বেশিরভাগ প্রমাণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তবে ভিক্টিমদের স্মৃতিতে সেই বিভীষিকাময় দিনগুলো আজও গভীরভাবে দগদগে হয়ে রয়েছে।
পরিদর্শনের সময় ভিক্টিমরা নির্যাতনের স্থানগুলো শনাক্ত করেন এবং তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তাঁরা জানান, কীভাবে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, কীভাবে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে নির্মম অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। অনেকেই ফিরে এসেছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে, তবে অনেকে আজও নিখোঁজ বা নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন চিরতরে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদও উপস্থিত ছিলেন, যাদের আন্দোলনের সময় গুম করে এই টর্চার সেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে জানান, কীভাবে অকথ্য নির্যাতনের মধ্য দিয়ে তাঁদের মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
এই পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে আয়নাঘরের নিষ্ঠুর ইতিহাস আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ উদাহরণ হিসেবে এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে ভিক্টিমদের স্বীকারোক্তি ও আয়নাঘরের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যা সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। আয়নাঘরের অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি দেখে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।