বিশেষ প্রতিবেদন-তাহমিদ খান
আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার জন্য রাজপথে প্রাণ দিয়েছিলেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা আরও অনেকে। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই আমরা পেয়েছি মাতৃভাষার মর্যাদা, যা আজও আমাদের জাতীয় চেতনায় গৌরবের প্রতীক।ভাষা আন্দোলনের পটভূমি
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাভাষী জনগণের দাবি ছিল বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এ দাবি আদায়ের জন্য ছাত্র-জনতা আন্দোলনে নামে এবং পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ভাষাসৈনিকরা। তাদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ২১শে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব
বাংলাদেশের এ গৌরবময় ইতিহাসকে সম্মান জানিয়ে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিনটি ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবে পালিত হচ্ছে।
দিনব্যাপী কর্মসূচি
সারাদেশের মতো নগরীতেও আজ পালিত হচ্ছে মহান শহীদ দিবস। রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়াও, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যালি এবং ভাষা আন্দোলন নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি দপ্তরগুলোতে দিনটি উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
যুব সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি
নগরীর তরুণ সমাজ ভাষা আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বর্তমান প্রজন্ম মনে করে, মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হলে আমাদের নিজ ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং বিদেশি ভাষার প্রভাবে নিজের ভাষার গুরুত্ব হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।শেষ কথা
২১শে ফেব্রুয়ারি শুধু অতীতের গৌরবগাঁথা নয়, এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক। ভাষার মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা আমাদের দায়িত্ব। আজকের এই দিনে আমরা প্রতিজ্ঞা করি, ভাষা আন্দোলনের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দেশকে আরও উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।