নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের রামু উপজেলার চাকমারকুল সীমান্তের ডেইঙ্গাপাড়া ও পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়া এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি জাহাঙ্গীর আলম বাদশার হামলায় আব্দুর রাজ্জাক (২৫) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। গত ২৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৫টার দিকে চাকমারকুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আব্দুর রাজ্জাক নিজে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শহীদুল্লাহ, সাইফুল ইসলাম ও মো. জসিম জানান, আব্দুর রাজ্জাককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। স্থানীয়রা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত রামু হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদশা একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও আলোচিত ইয়াবা কারবারি। তার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। তিনি ও তার সহযোগীরা বহু মামলার আসামি।
থানা সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম বাদশা ও তার বাহিনী নিয়মিত মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। কিছুদিন আগে ইয়াবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সিএনজি যোগে কক্সবাজার যাওয়ার সময় লিংকরোড এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে পড়ে। তবে, সে কৌশলে গাড়িতে ইয়াবা রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর সন্দেহ তৈরি হয় যে, শহীদুল্লাহ ও আব্দুর রাজ্জাক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়েছেন। এরপর থেকেই জাহাঙ্গীর আলম বাদশা তাদের নিয়মিত হুমকি দিতে থাকেন। ঘটনার দিন আসরের নামাজের পর আমানুল্লাহর দোকানের সামনে শহীদুল্লাহ ও বাদশার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাদশা তার লোকজনকে ডেকে এনে আব্দুর রাজ্জাকের ওপর হামলা চালান।
পরে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জাহাঙ্গীর আলম বাদশার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে, প্রথমে তিনি ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করেন। তবে দীর্ঘ আলাপচারিতার পর স্বীকার করেন যে, শহীদুল্লাহর বাড়িতে প্রশাসনিক অভিযান হওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছে। কিন্তু যখন ইয়াবা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন এবং একপর্যায়ে ফোন কেটে দেন। প্রতিবেদকের কাছে এই কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে।
এবিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, "এই হামলার সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। হামলাকারীরা ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে এবং দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।"