মোঃ শহিদুল ইসলাম শহীদ
থানচি বান্দরবান সেনাবাহিনীর সহায়তায় পালিয়ে যাওয়া সীমান্ত এলাকা থেকে বম পরিবার ফিরল নিজ পাড়াতে।
বান্দরবানে ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড এর অধীনস্থ ১৬ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সহায়তায় দীর্ঘ ২ বছর পর থানচি উপজেলা সীমান্তে থানচি সদর ইউনিয়নের প্রাতা পাড়া বম পাড়ার ১টি পরিবারের ৫ জন সদস্য নিজ বাড়িতে ফিরেছে।
গত ৮ই মে(বৃহস্পতিবার)২০২৫ দুপুরে থানচি সদর ইউনিয়নের ৩ নং ইউনিয়ন প্রাতা পাড়া বমপাড়ায় প্রবেশ করেন তারা। এ সময় পাড়াবাসীকে সেনাবাহিনীর বাকলাই পাড়া সাব জোন ক্যাম্পের সেনাসদস্য কর্তৃক সুস্বাদু খাবার খাওয়ানো হয়। এছাড়াও আগত পরিবারকে মেডিকেল সহায়তা ও ওষুধপত্র প্রদান এবং তাদের মাঝে শুকনা রসদ(পরিবারকে) চাল৫ কেজি,আটা ২কেজি,চিনি ২কেজি,তেল ২কেজি,ডাল ২কেজি,লবণ ১কেজি চা-পাতা ১কেজি ও মসলা সামগ্রী) বিতরণ করা হয়।
প্রাতা পাড়া পাড়াবাসী সুত্রে জানা যায় ২০২৩ সালে এপ্রিল মাসে পাড়ায় সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সশস্ত্র গ্রুপ এবং বাকলাই পাড়া সেনা সাব জোন ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা কেএনএফ সদস্যদের আটক করতে অভিযানে মাঠে নামলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এবং কেএনএফ সদস্যগন পাড়াবাসীর উপর নানা রকম নির্যাতন ও অত্যাচারের ভয়ে তারা গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়।ঐসময়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে মোট ১৮ টি পরিবার বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হওয়ার কারণে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানের ১২ টি বম পরিবারের ৭৫ জন সদস্য বাড়িতে ফিরেছে,গত ১৮ ডিসেম্ব ২০২৪ সালে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ একটি পরিবারের ৫সদস্য নিজ পাড়াতে আগমন করেন।
প্রাতা পাড়া পাড়ার বাসিন্দা পারক্যালিং বম (৬৮) বলেন, ‘কেএনএফ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমস্যার কারণে তারা দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ বনজঙ্গলে, বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলো। সেনাবাহিনীর আশ্বাসে আজকে বাড়িতে ফিরতে পেরে খুব খুশি লাগছে তাদের।’ পাড়ার নতুন আগমন সদস্য রোয়াল চম বম (৪৪) বলেন, ‘প্রায় ২ বছর পর বনজঙ্গলে পালিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় অনেক দিন পর নিজ পাড়ার বসতভিটায় ফিরতে পেরেছি। এত আনন্দ বলার মতো না।
বসতবাড়িতে ফিরে রুই শিং বম (৪০) বলেন, দীর্ঘ ২ বছর আগে তাঁরা পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল। সেনাবাহিনীর কারণে নিজ প্রাতা পাড়া পাড়ায় পরিবারসহ ফিরতে পেরে খুব আনন্দবোধ করছেন।
বাকলাই সেনা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আসিফ জুবায়ের জানান, বম জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসন ও ফেরত আসা জনগোষ্ঠীর চাকুরীর ব্যবস্থা, আর্থিক সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় খাবারের রসদ সরবরাহ ইত্যাদি ব্যাপারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ব্যক্ত করেন।