নিজস্ব প্রতিবেদক:
বি এম ইউসুফ আলীর এনআরবি ইসলামিক
ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালক পদ বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে ৬ সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্ট বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের দায়ের করা লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ২৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহামাদের ইস্যু করা গত ৯ এপ্রিলের চিঠির কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক খিজির আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ।
একইসঙ্গে বি এম ইউসুফ আলী ও অপর তিন পরিচালককে বীমা কোম্পানিটিতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে এক চিঠিতে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ৪ পরিচালকের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন বীমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহামাদ।
পদ শূন্য ঘোষণা করা ওই ৪ পরিচালক হলেন- পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট বি এম ইউসুফ আলী, লিবার্টি লিভিং লিমিটেডের প্রতিনিধি মো. জামাল উদ্দিন, পারিজাত ডেভেলপার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি ফৌজিয়া ইয়াছমিন এবং পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী সেক্রেটারি মোস্তফা হেলাল কবির।
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহামাদের এমন নির্দেশনার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট মামলা (কোম্পানি মেটার নং- ৬৬৫/২০২৫) দায়ের করেন বি এম ইউসুফ আলী।
গত ২৯ এপ্রিল ওই রিট মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত কিবরিয়া গোলাম মোহামাদের ওই চিঠির কার্যক্রম ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন এবং সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের বীমা কোম্পানিটিতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।
সূত্র মতে, এনআরবি ইসলামিক লাইফের মুখ্য নির্বাহী শাহ জামাল হাওলাদারের নিয়োগ নবায়নের আবেদন যাচাই-বাছাই করতে ২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে আইডিআরএ। কমিটি এনআরবি ইসলামিক লাইফের আয়-ব্যয়সহ আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন দাখিল করে। এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয় ৩ জুন ২০২৪ তারিখে।
আইডিআরএ’র প্রতিবেদনে বীমা কোম্পানিটির প্রথম ৩ বছরে সংগৃহীত ৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ফেলা, অনুমোদনবিহীন বীমা পরিকল্পের আওতায় পলিসি বিক্রি করে ২৩ কোটি টাকা লোকসান করা, ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের হিসাবে মিথ্যা তথ্য প্রদর্শন, পরিশোধিত মূলধন পুনর্ভরণ করতে না পারা, বীমা গ্রাহকের দায় পরিশোধে পর্যাপ্ত গ্রাহক তহবিল গঠন করতে না পারার আর্থিক চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটিতে মন্তব্য করা হয় কোম্পানিটি দেউলিয়ার পর্যায়ে রয়েছে।
এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এনআরবি ইসলামিক লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে শাহ জামাল হাওলাদারের নবায়ন নিয়োগের আবেদন না-মঞ্জুর করে আইডিআরএ। এই ঘটনায় পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশ শাহ জামাল হাওলাদারকে মুখ্য নির্বাহী রাখতে তথ্য গোপন করে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করে।
অপরদিকে বিএম ইউসুফ আলীসহ ৪ পরিচালক এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা চিহ্নিত করণে দাবি উঠালে তাদের পরিচালক পদ বেআইনিভাবে শূন্য ঘোষণা করা হয়।