নুর হোসেন আকাশ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ বড়দিঘীর পাড় প্রতিদিন ভয়াবহ যানজটে পরিণত হচ্ছে। এই সড়ক দিয়েই হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ হয়। কিন্তু নিত্যদিনের তীব্র যানজটের কারণে দূরপাল্লার যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়দিঘীর পাড় মোড়ে শৃঙ্খলার অভাবই যানজটের অন্যতম কারণ। এখান থেকে অসংখ্য সিএনজি তিন নম্বর বাজার ও ভাটিয়ারীর দিকে ছাড়ে, আবার কিছু সিএনজি পূর্ব পাশ হয়ে ভাটিয়ারীর উদ্দেশ্যে চলে যায়। অন্যদিকে অনেক সিএনজি সরাসরি হাটহাজারী, ফটিকছড়ি কিংবা রাঙ্গামাটির পথে যাত্রী তোলে। নির্দিষ্ট কোনো জংশন বা স্টপেজ না থাকায় চালকরা রাস্তার মাঝেই যাত্রী ওঠানামা করায় প্রায়ই জট তৈরি হয়।
তাছাড়া তিন নম্বর রোডের বাসগুলো বড়দিঘীর পাড় এসে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে, ফলে রাস্তা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এর কারণে জরুরি সেবা বাহন, বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সও আটকে যায়, যা জনজীবনে বাড়তি ভোগান্তি ডেকে আনে।
ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও অটোরিকশা চালকরা নিয়ম না মেনে রাস্তার এক পাশ থেকে আরেক পাশে দ্রুতগতিতে চলে যায়। একইভাবে পথচারীরাও শৃঙ্খলা না মেনে ইচ্ছেমতো রাস্তা পারাপার করে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
অতিরিক্ত কারণ
বড়দিঘীর পশ্চিম দিক দিয়ে বড় বড় বাস ও ট্রাক ঢোকা-বের হওয়ার সময়ও জট তৈরি হয়। এছাড়া বড়দিঘীর পাড়ে অবস্থিত গ্যাস পাম্পের সামনে গাড়ির সিরিয়াল ও লম্বা লাইনের কারণে দীর্ঘক্ষণ যানজট লেগেই থাকে।
বিশেষ মৌসুমে এ ভোগান্তি আরও তীব্র আকার ধারণ করে। রোজার শেষের দিকে, ঈদুল আযহা (কোরবানি) উপলক্ষে, মাইজভান্ডার শরীফের ওরশ এবং দুর্গাপূজার সময়ে এই যানজট ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে যায়।
প্রতিকার
অভিজ্ঞদের মতে, এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি—
বড়দিঘীর পাড় সড়ক প্রশস্ত করা।
দূরপাল্লার গাড়িগুলোর নির্বিঘ্ন চলাচলের জন্য কালামিয়া বাজারের মতো বিকল্প সড়ক তৈরি করা।
মোড়গুলো বন্ধ করে দিয়ে ইউটার্ন সিস্টেম করা।
সাধারণ যাত্রীদের জন্য ওভার ব্রিজ নির্মাণ।
এগুলো বাস্তবায়ন হলে বড়দিঘীর পাড় এলাকায় যানজট কমার সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ৯৯ শতাংশ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জনদুর্ভোগ লাঘবের প্রত্যাশা
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের এই তীব্র যানজটে জনজীবন একেবারে অচল হয়ে যাচ্ছে। তারা কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। পাশাপাশি এ সমস্যা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেরও কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।