মোহাম্মদ আবদুল কাদের, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদে ঘটেছে এক রহস্যময় চুরির ঘটনা। আশ্চর্যের বিষয় হলো—আলমারিতে থাকা নগদ টাকা অক্ষত রেখে চোরেরা নিয়ে গেছে মনিটর, পিডিএফ ফাইল ও সিসিটিভির হার্ডডিস্ক।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে দায়িত্বে ছিলেন ৮নং ওয়ার্ডের চৌকিদার মোহাম্মদ নাঈম উদ্দিন ও ৬নং ওয়ার্ডের চৌকিদার লিটন কুমার নাথ। তারা অফিসের একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে তাদের রুমের দরজা তালাবদ্ধ করে দেয়। এরপর সচিবের কক্ষে ঢুকে আলমারি ভেঙে সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করে দেয় এবং মিনিটর ও হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়।
চৌকিদার মোহাম্মদ নাঈম উদ্দিন বলেন, রাত ৩টার দিকে মোবাইল দেখতেছিলাম। হঠাৎ দেখি কেউ একজন বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রথমে মনে করেছিলাম, কোনো সহকর্মী মজা করেছে। অনেকক্ষণ পরও দরজা না খুললে জানালা দিয়ে দেখি একজন সচিবের রুমে ঢুকছে। অনেকক্ষণ চিৎকার করার পর স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে।
শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ওয়াসিল আহমদ বলেন, এটা সাধারণ চুরি নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা। চোরেরা আলমারি ভাঙার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু টাকা নেয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও আলমিরাতে অক্ষত ছিলো। তবে, সিসিটিভির ক্যামেরা নষ্ট করে মনিটর ও হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছে। আমার ৩০ বছরের চাকরি জীবনে এমন ঘটনা দেখিনি। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি, স্যারের নির্দেশে চৌকিদার নাঈমকে থানায় জিডি করতে পাঠানো হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটা চুরি নয়। যদি সাধারণ চোর হতো, তাহলে পিসি, ল্যাপটপের সাথে নগদ টাকা নিয়ে যেত। কিন্তু তারা শুধু মনিটর ও হার্ডডিস্ক পিডিএফ ফাইল চুরি করেছে। এটা স্পষ্টতই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরও জানান, চুরির ঘটনার পরপরই কর্ণফুলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। রবিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হবে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।