প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চৌধুরী
বান্দরবান আলীকদম উপজেলার মারাইংতং বৌদ্ধ জাদীর একটি মূর্তি বুধবার (২১ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভাংচুরের শিকার হয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
মারাইংতং বৌদ্ধ জাদী পরিচালনা কমিটির সভাপতি উ উইচারা মহাথেরো অভিযোগ করেছেন, লামা উপজেলার সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রোর নেতৃত্বেই এই ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
তবে, অভিযোগের বিষয়ে সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রো তাৎক্ষণিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রাতে আলাপকালে তিনি দাবি করেন, তিনি নিজে একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং কেন মূর্তি ভাঙবেন তা বোধগম্য নয়। তিনি এই ঘটনাকে একটি ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মারাইংতং জাদীর জমি নিয়ে জাদী কর্তৃপক্ষ ও চংপাত ম্রো হেডম্যান গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ বিদ্যমান ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই বিরোধের জের ধরেই মূর্তি ভাংচুরের ঘটনাটি ঘটেছে।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় যুব নেতা উইলিয়াম মার্মা। তিনি বলেন, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মনে এতো বড় আঘাত দেওয়ার স্পর্ধা কার? তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। মারাইংতং পাহাড়ে নির্মাণাধীন বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর—আমরা মর্মাহত, ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। ধর্মীয় সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী সম্প্রীতি যেন নষ্ট না হয়—এই হোক আমাদের সবার আহ্বান।”
এই বিষয়ে ২৮৮নং আলীকদম মৌজার হেডম্যান জানান, তারা রাতেই থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তারা বিকেলে বৌদ্ধ মূর্তি ভাংচুরের খবর শুনেছেন।
আলীকদম থানার এ.এস.আই আবু সাঈদ জানান, তাদের দল রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে পৌঁছানোর জন্য তারা গাড়ির অপেক্ষা করছেন। গাড়ি পাওয়া না গেলে তারা হেঁটে ঘটনাস্থলে যাবেন বলেও জানান।
মূর্তি ভাংচুরের এই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায় অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন