1. live@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : news online : news online
  2. info@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : দৈনিক অনলাইন তালাশ পর্ব ২১ :
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবির অভিযানে মাদক সহ রোহিঙ্গা যুবক আটক বান্দরবানে ঝরনায় নিখোঁজ মেহরাবের লাশ চার দিন পর উদ্ধার বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র সরঞ্জামসহ ৯ জন আটক বান্দরবানে ঝর্ণা দেখতে গিয়ে কিশোর নিখোঁজ এনসিপি সিলেট জেলার যুগ্ম-সমন্বয়কারী মনোনীত হয়েছেন গোয়াইনঘাটের ফয়সল আহমদ  পার্বত্য জনপদে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে, থানচিতে মতবিনিময় সভায় বান্দরবান জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর সেনাবাহিনীর সহায়তায় পালিয়ে যাওয়া বম পরিবার ফিরল নিজ গ্রামে  সিএমপি’র ডিবি’র অভিযানে চোর চক্রের মূল হোতাসহ আটক- ৩  সিএমপি’র থানার লুণ্ঠিত আগ্নেয়াস্ত্র গুলিসহ আটক -১ সাংবাদিক আহাম্মদ আলীর পিতার ইন্তেকাল

বন্দর নগরীতে যুক্ত হচ্ছে ছয়টি লাইটার জেটি

ডেক্স রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
  • ২৫০ বার পড়া হয়েছে

ডেক্স রিপোর্ট

চট্টগ্রাম বন্দর অপারেশনে যুক্ত হচ্ছে আরও ছয়টি লাইটার জেটি। পতেঙ্গা লালদিয়ার চরের পাশে নিজেদের জায়গায় লাইটার জেটিগুলো করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব জেটি অপারেশনে ঠিকাদার নিয়োগের কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাইটার জেটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সম্প্রসারণ হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের। বিশেষ করে এসব জেটি ব্যবহার করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সুফল পাবেন। এতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক সময়ে কাগজকে বলেন, ‘লালদিয়া চরের পাশে বন্দরের নিজস্ব জায়গায় নতুন করে ছয়টি লাইটার জেটি করা হচ্ছে। ডেভেলপ করা হচ্ছে পুরো জায়গাটি। এরই মধ্যে পুরো ইয়ার্ড নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। যারা লাইটার জেটি অপারেশনের জন্য মনোনীত হবেন, তারা আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে তাদের অপারেশন শুরু করবেন।’তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে লাইটার জেটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ছয়টি জেটির জন্য আলাদা আলাদা দরপত্র জমা হয়েছে। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতা ছয় প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করার কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে।’বন্দর সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দর সড়কের পতেঙ্গা ইনকনট্রেড কনটেইনার ডিপোর পেছনে লালদিয়ার চরের উদ্ধার করা জায়গার পাশে বন্দরের নিজস্ব ১৯ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ একর জায়গায় ছয়টি লাইটার জেটির কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকা দরপত্রে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে এরই মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণ করা হয়েছে।ব্লক নম্বর-১ এর জন্য ৬ কোটি ৫ হাজার টাকায় ওমেরা ফুয়েলস লিমিটেড, ব্লক নম্বর-২ এর জন্য ৬ কোটি ৮ হাজার টাকায় ইস্ট কোয়েস্ট ট্রেডিং (প্রা.) লিমিটেড, ব্লক নম্বর-৩ এর জন্য ৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় এস এস ট্রেডিং, ব্লক নম্বর-৪ এর জন্য ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, একই দরে ব্লক নম্বর-৫ এর জন্য জিপিএইচ ইস্পাত এবং ব্লক নম্বর-৬ এর জন্য সর্বোচ্চ ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকায় এন মোহাম্মদ ট্রেডিং করপোরেশনকে মনোনীত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ব্লকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি খালাসের জেটি হবে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্ক্র্যাপ, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি করা পণ্য খালাস করবে।বন্দর সূত্র জানায়, প্রতিটি লাইটার জেটির জন্য প্রায় ২ দশমিক ৫ একর জায়গা বরাদ্দ রাখা রয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেক জেটির জন্য নদীর মুখে ৭১ মিটার জায়গা রাখা হয়েছে। যেখানে পন্টুন স্থাপন করে জাহাজের পণ্য খালাস করবে ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি পণ্য খালাস করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে সংযোজন করতে হবে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ছয়টি জেটি ইজারা দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ছয় প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সরকারের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর নিকটজন। তাছাড়া দুটি জেটিতে সর্বোচ্চ দরদাতা আলাদা প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের দর হচ্ছে একই। প্রাথমিকভাবে জেটিগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হচ্ছে।জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে আইকনিক প্রজেক্ট বে-টার্মিনাল প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে থেকে লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল করার উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালের লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পটি মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে নানান জটিলতার সম্মুখীন হয় বন্দর। ওই জায়গা দীর্ঘদিনের পুরোনো অবৈধ বসতি ছিল বড় প্রতিবন্ধক। তবে ২০২১ সালের প্রথম দিকে লালদিয়া চরের ১৭শ অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করে পুরো জায়গা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।পাশাপাশি লালদিয়া চরের পাশে কর্ণফুলী নদী তীরের ১৯ একর খালি জায়গা ভরাট করে ইয়ার্ড নির্মাণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এই জায়গায় এরই মধ্যে কাস্টমসের এফ ও রামেজ ডিভিশনের অফিস, মেরিন ফিশারিজের সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট, রেড ক্রিসেন্টের অফিস কাম জেটিসহ বন্দরের একটি স্থাপনা রয়েছে।বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-ব্যবস্থাপক (ভূমি) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন সময়ের কাগজকে বলেন, ‘ইনকনট্রেড অফডক ডিপোর পেছনে বন্দরের নিজস্ব ১৯ একর জায়গায় ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। পাশাপাশি ইয়ার্ড অংশে ছয়টি লাইটারেজ জেটি হচ্ছে। যাদের ইজারা দেওয়া হবে বরাদ্দ প্রাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে তারা অপারেশনে যাবে।’চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজ সময়ের কাগজকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে লাইটারেজ জাহাজ খালাসের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা এতদিন ছিল না। যেসব লাইটারেজ খালাস হচ্ছে, সেগুলোও মান্ধাতা আমলের মতোই। তেমন সুযোগ সুবিধা নেই। আমরা একবিংশ শতাব্দীতে এলেও আমাদের বন্দরে এখনো আধুনিক লাইটার জেটি নেই। এখন বন্দর কর্তৃপক্ষ ছয়টি আধুনিক লাইটার জেটি করছে, এটি ইতিবাচক একটি উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘লাইটার জাহাজ দিয়ে দ্রুত আমদানি পণ্য খালাস করা গেলে বিদেশগামী মাদার ভ্যাসেলগুলোও নির্দিষ্ট সময়ে খালাস করা সম্ভব হবে। এতে পণ্যের আমদানি ব্যয় কমে যাবে। যার সুফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি বিদেশে আমাদের বন্দরের ভাবমূর্তিও বাড়বে। তাছাড়া যারা এসব লাইটার জেটিতে বিনিয়োগ করছেন, তারাও দ্রুত তাদের পণ্য খালাস করতে পারবে। এতে অন্য বেসরকারি উদ্যোক্তারাও এ ধরনের জেটি অপারেশনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।’
২০১৮ সালের কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট এলাকায় পাঁচটি লাইটার জেটি নির্মাণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এগুলো বিএসএম গ্রুপ, বিএসআরএম, কেএসআরএম, আবুল খায়ের স্টিল এবং কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিএসএম গ্রুপ তাদের জেটি দিয়ে খাদ্যশস্য, বিএসআরএম, কেএসআরএম ও আবুল খায়ের স্টিলকে স্ক্র্যাপ এবং কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডকে সিমেন্ট কাঁচামাল খালাসের জন্য ইজারা দেওয়া হয়।

বৃষ্টিতে টানা তৃতীয় দিন ডুবল চট্টগ্রাম নগরী

নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, বাদুরতলা, বাকালিয়া ডিসি রোড, কেবি আমান আলী রোড, আগ্রাবাদ, হালিশহর, চান্দগাঁও, কাতালগঞ্জ, দেওয়ান বাজার ও শুলকবহরসহ অধিকাংশ নিচু এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।
আবহাওয়া অফিস সহকারী পূর্বাভাষ কর্মকর্তা শ্রীকান্ত কুমার বসাক বলেন, ‘এই অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আগামী ৪০/৪৮ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কাও রয়েছে।’এদিকে শুক্রবার থেকে নগরীর পাহাড়গুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, মতিঝর্ণা, বাটালী হিল, ফিরোজ শাহ, আকবর শাহ এলাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।তাদের কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা তাদের স্থানীয় স্কুলে থাকতে বলেছি কিন্তু তারা তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, বাদুরতলা, বাকালিয়া ডিসি রোড, কেবি আমান আলী রোড, আগ্রাবাদ, হালিশহর, চান্দগাঁও, কাতালগঞ্জ, দেওয়ান বাজার ও শুলকবহরসহ অধিকাংশ নিচু এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।আজ সকাল ৩:৪০টায় বাদুরতলা এলাকার রাস্তার পাশের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ দেখা যায়। দোকানিরা জানান, বৃষ্টির পানি দোকানে ঢুকে যাওয়ায় জিনিষপত্র নষ্ট হচ্ছে।বাদুরতলা এলাকার দোকানি শফিকুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল বৃষ্টির পর তার দোকানে পানি ঢুকে যায়। শুক্রবার বিকেলে সেই পানি অপসারণ করেন তিনি। এর পর সেদিন রাতে আবার বৃষ্টিতে তার দোকানে পানি ঢোকে।চট্টগ্রাম শহরের রাস্তায় জমে আছে কোমর সমান পানি। তিনি বলেন, ‘আরও বৃষ্টি হলে আবার দোকানে পানি ঢুকবে, তাই এখন আর পানি অপসারণ করছি না। এই কারণে আজ অধিকাংশ দোকান বন্ধ আছে।’গত তিন দিনে প্রবল বৃষ্টিতে চকবাজার এলাকার চক সুপার মার্কেটের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ে। দোকানিরা জানান নিচতলায় নোংরা পানি ঢুকে দোকানের মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তেলিপট্টি থেকে চকবাজার কাঁচাবাজার পর্যন্ত রাস্তা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তার পাশের নর্দমা থেকে উপচে পড়া নোংরা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা।পশ্চিম বাকালিয়া ডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা তাপসী ঘোষ চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনের রাস্তা দিয়ে নোংরা পানি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনি জানান, তার শাশুড়ি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন।তিনি বলেন, ‘রাস্তায় খুব কম যানবাহন চলাচল করছে। আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে আমি মাত্র দুটি খালি রিকশা পেলাম, কিন্তু চালকরা খুব বেশি ভাড়া দাবি করছিলেন। তাই, আমাকে নোংরা পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ২০১৭ সাল থেকে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৭ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, কিন্তু প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পাঁচ বছর পরও তার কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ নগরবাসীর।এই ব্যাপারে মন্তব্য জানার জন্য সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামসের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সিডিএ মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলীকে বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।তবে ৩ মাস আগে, সংবাদ সম্মেলনে শাহ আলী সাংবাদিকদের বলেন, তখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ২৬ শতাংশ ছিল।অনেকেই আবার খাল ও নর্দমা দিয়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, চসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নর্দমাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করেন না।যোগাযোগ করা হলে চসিক পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন বলেন, সিডিএ নগরীর ৩৬টি বড় খাল নিয়ে কাজ করছে এবং যতদিন পর্যন্ত তারা এগুলো চসিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর না করছে, ততদিন এসব খালে চসিক কিছু করতে পারে না। ততদিন পর্যন্ত তাদেরকেই খালগুলো খনন করে পানি চলাচল সুগম রাখতে হবে।জানতে চাইলে মোবারক বলেন, চসিক-এর আওতাধীন নর্দমা ও খাল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। এর পর লোকজন আবার প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগ ফেললে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

অপরিকল্পিত নগরায়নে জলাবদ্ধতা

২০২২ সালের নভেম্বরে, বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এবং ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা) পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে চট্টগ্রামের সাড়ে ১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা সরাসরি জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে আছে। আর পরোক্ষ ঝুঁকিতে আছে ৫২ বর্গকিলোমিটার এলাকা।গবেষকরা বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণেই নগররীর এসব এলাকা জলাবদ্ধতার ঝুঁকির মধ্যে আছে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়, বিগত ৫৩ বছরে শহরের ৭০ শতাংশ খাল বিলীন হয়ে গেছে।অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো গড়ে তোলায় আগ্রাবাদ, হালিশহর, বাকালিয়া, মোহরা, খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইসহ নগরীর নিম্নাঞ্চল শুষ্ক মৌসুমেও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি জন আর স্নেল যখন শহরের ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেন, তখন নগরীতে ৭০টি খাল পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ওয়াসা পরিচালিত সমীক্ষা অনুসারে, ৫৩ বছরে খালের সংখ্যা ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে বর্তমানে ২২টিতে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য মাল্টি হ্যাজার্ড কন্টিনজেন্সি প্ল্যান শীর্ষক সমীক্ষায় আরও জানা গেছে, চসিকের মোট ২২টি ওয়ার্ড সরাসরি জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে রয়েছে, এর মধ্যে ৬টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, ৩টি চরম ঝুঁকিতে এবং ১৩ টি ওয়ার্ড মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে।
জলাবদ্ধতার খুব দ্রুত সমাধান করা না হলে ভবিষ্যতে মাত্র ২০০ মিমি বৃষ্টিপাতেও শহরের বেশিরভাগ নিচু এলাকা ১ দশমিক ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে বলে জানান গবেষকেরা।এই গবেষণার প্রধান পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহ জালাল মিসুক।
যোগাযোগ করা হলে মিসুক বলেন, ‘যদি আমরা সিডিএ মেগা প্রকল্প বা জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত অন্য যে কোনো প্রকল্পের সুবিধা পেতে চাই, তবে আমাদের পরিকল্পিত নগরায়ণে যেতে হবে। শহরের হারিয়ে যাওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং বিদ্যমান খালগুলোকে অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের উচিত খাল-নালায় আবর্জনা কিংবা পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রি না ফেলা।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© www.dainikonlinetalaashporbo21.com