1. live@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : news online : news online
  2. info@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : দৈনিক অনলাইন তালাশ পর্ব ২১ :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
রাজশাহীর দুর্গাপুরে নিখোঁজ আয়েশা সিদ্দিকার লা*শ উদ্ধার হয়েছে পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: মুক্তাদির হোসেন কালীগঞ্জ পৌর শাখা ছাত্রদল এর বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন রামুর শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহীন ডাকাত সেনা অভিযানে আটক কটেজ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার। কালীগঞ্জ উপজেলা জনতা দলের সদস্য সচিব মো নোমান পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রুমা ও থানচিতে পর্যটকদের যাতায়াত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। নরসিংদীর শিবপুরে অপহরণ ও প্রতারক চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম সহ ১ কারিগর এবং ১৯৫০পিচ ইয়াবা সহ মাদক কারবারী আটক লামা হাসপাতালে প্রথম সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসা 

আরসা প্রধান মাস্টার সলিম, বিপুল অস্ত্র গ্রেনেড রকেট সেল’সহ আটক-২

মোহাম্মদ মাসুদ
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪
  • ২২০ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ মাসুদ

সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে হত্যাকান্ডের নেপথ্যে থাকা বাংলাদেশে আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম’সহ দুইজন আরসা সন্ত্রাসী কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানা থেকে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার; বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেল উদ্ধার।

অদ্য উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড় হতে গ্রেনেড, রাইফেল গ্রেনেড, আইইডি ও ককটেলসহ অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকদ্রব্যাদি সমূহ অনিরাপদ, ঝুকিপূর্ণ ও সংবেদনশীল হওয়ায় বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কক্সবাজার হতে যথাযথ অনুমতি গ্রহণপূর্বক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কর্তৃক নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আরসা’র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অগ্নিসংযোগ ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে আরসা’র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। এই আরসা সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গাদের উপর প্রভাব খাটায়। কেউ আরসার অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরোধিতা করলে কিংবা তাদের কথা না শুনলে তারা বেশিরভাগই অপহরণ ও হত্যা শিকার হয়। রোহিঙ্গা নাগরিক প্রর্ত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করায় ২০২১ সালে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ আরসার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছিল। এছাড়াও ২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হন। উক্ত সন্ত্রাসী হামলায় একজন র‌্যাব সদস্য গুরুত্বর আহত হয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালে অদ্যাবধি পর্যন্ত ১৬ জন নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এ সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম নির্মূলে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার শুরু থেকেই বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী চালু রেখেছে। র‌্যাব বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করে আসছে। সন্ত্রাস বিরোধী বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আরসার সামরিক কমান্ডার হাফেজ নূর মোহাম্মদ/ অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস/ গান কমান্ডার রহিমুল্লাহ @ মুছা/ অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদ @ নোমান চৌধুরী ও আবু তৈয়ব/ কিলার গ্রুপের প্রধান নূর কামাল @ সমিউদ্দিন/ ইন্টেলিজেন্স সেল এর কমান্ডার ওসমান গনি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও লজিস্টিক শাখার প্রধান, গান গ্রুপের প্রধান, অর্থ শাখার প্রধান এবং আরসা প্রধান নেতা আতাউল্লাহর দেহরক্ষী আকিজ’সহ সর্বমোট ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের নিকট থেকে ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ০৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী বিরোধী অভিযান, শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ফলে আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিস্ক্রিয় বা নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়ে। এর ফলে বিগত মার্চ-এপ্রিল ২০২৪ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিশেষ করে হত্যাকান্ডের তেমন কোন ঘটনা সংঘঠিত হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে আবার এই সন্ত্রাসী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ পুনরায় গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী শুরু করে। পার্শ্ববর্তী দেশে সৃষ্ট সংঘর্ষকে কাজে লাগিয়ে আরসাসহ সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কিছু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসার একটি তথ্য র‌্যাবের নিকট আসে। এছাড়াও আরসা নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়ায় পুনরায় পুনঃসংগঠিত হওয়ার লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কিছু নেতৃপর্যায়ে আরসা সদস্যকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়েছে বলে তথ্য পায় র‌্যাব।

প্রাপ্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ কার্যক্রম শুরু করে এবং জানতে পারে, মাস্টার সেলিম বর্তমানে বাংলাদেশের আরসার প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার নেতৃত্বে পুনরায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাশ সৃষ্টি করছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবগত হয়ে অদ্য ভোররাতে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে বর্তমানে বাংলাদেশে আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম’সহ দুইজন আরসা সন্ত্রাসী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ০৫টি গ্রেনেড, ০৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরী হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ০১টি বিদেশী রিভলবার, ০৯ রাউন্ড 9MM পিস্তলের এ্যামুনিশন, ০১টি এলজি এবং ০৩টি ১২ বোর কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

৮। গ্রেফতারকৃত আরসা সন্ত্রাসীরা হলো,
(১) মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম (৩৮), পিতা-সৈয়দুল আবেরা, মাতা-ছুরিয়া বিবি, ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প, উখিয়া, কক্সবাজার।
(২) মোঃ রিয়াজ (২৭), পিতা-মৃত মোহাম্মদ নুর, মাতা-জোহরা বেগম, ০৮/ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ব্লক-এ/২৩, বালুখালী, উখিয়া, কক্সবাজার।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক। গ্রেফতারকৃত মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালের পার্শ্ববর্তী দেশ হতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ক্যাম্প-১৫ এ বসবাস শুরু করে। সে পার্শ্ববর্তী দেশে থাকাকালীন সেখানকার জোন কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে দুই মাস দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করে।

আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার কোন্দলসহ খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের উপর পারদর্শী। প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প-১৫ এর কমান্ডার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আরসা নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়ায় সে বাংলাদেশে আরসার প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব নেয়। পার্শ্ববর্তী দেশে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফলে লুটকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ বিভিন্ন মাধ্যম হতে সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাশ সৃষ্টি করে। যার ফলশ্রুতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুনরায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্রীক মারামারি, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। তার বিরুদ্ধে ০৩টি হত্যা মামলাসহ অন্যান্য বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত মোঃ রিয়াজ ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যুত হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং বসবাস শুরু করে। সে ২০১৮ সালে মৌলভী মোঃ ইব্রাহিমের মাধ্যমে আরসায় যোগদান এবং প্রাথমিকভাবে আরসার হয়ে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করে। এ সময় সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ আরসা বিরোধী সংগঠনের সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ্য করতো। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে পুনরায় পার্শ্ববর্তী দেশে ফিরে যায় এবং সেখানে ০৬ মাসের সামরিক বিভিন্ন বিষয়াদিসহ মাইন, বোমা, হাত বোমা ও বিস্ফোরক তৈরীতে প্রশিক্ষণ লাভ করে। পরবর্তীতে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে গ্রেফতারকৃত মাস্টার সলিমের অন্যতম সহযোগী হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে ০১টি হত্যা মামলা মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তথ্য নিশ্চিত করেছেন, মোঃ আবু সালাম চৌধুরী,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
সিনিয়র সহকারি পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© www.dainikonlinetalaashporbo21.com