স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিএনপির নেতার সাথে আওয়ামী লীগের দুই নেতার খাম বিনিময়ের পুরোনো একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করার জেরে রাঙ্গাবালী উপজেলায় রিয়াজ আহমেদ নামে এক কলেজ প্রভাষককে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে আহত ও জনসম্মুখে জোরপূর্বক মাফ চাইতে বাধ্য করার সংবাদ পাওয়া গেছে।
গত রবিবার ১৯’জানুয়ারি রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইস বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার ২০’জানুয়ারি-২৫ ইং তারিখ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন আহত প্রভাষক তিনি চরমোন্তাজ আব্দুল সত্তার স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত রয়েছেন।
আহত প্রভাষক মো. রিয়াজ আহম্মেদ বর্তমানে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় অংশ নেয় ৩০-৩৫ জনের একটি দল, যাদের সবাই রাঙ্গাবালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলামের অনুসারী। হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রকাশ্যে এগিয়ে আসতে সাহস করেনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে নজরুল ইসলাম নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে রাঙ্গাবালী উপজেলায় আলোচনার শীর্ষে আছেন। গত ১৫ জানুয়ারি ফেসবুকে একটি পুরোনো ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে নজরুল ইসলামকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার সঙ্গে খাম বিনিময় করতে দেখা যায়। এ ছবি শেয়ার করার পর থেকেই তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। এছাড়াও (৯ জানুয়ারি) চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রকাশিত এডহক কমিটিতে সভাপতি পদে পছন্দের প্রার্থী মনোনীত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নজরুল ইসলাম। এর পরদিন তিনি কিছু নেতাকর্মী ও ব্যক্তিগত অনুসারীদের নিয়ে কলেজ গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। যার প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষ সংবাদ সম্মেলন করেন।
চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি এডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুন্সীর পছন্দের প্রার্থী কলেজের সভাপতি নির্বাচিত না হওয়ায় তিনি সামাজিক মাধ্যমসহ প্রকাশ্যে হুমকিসহ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। সেই রেশ ধরে আমার ভাই প্রভাষক মো. রিয়াজ স্লুইস বাজারে যাওয়ার পরে সন্ত্রাসী স্টাইলে তুলে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তা উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে ১১ জনের নামে মামলা করেছি।
চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, যতটুক শুনেছি মারধর করা হয়নি, জিজ্ঞেস করা হয়েছে। তুই এ ধরনের স্টাটাস কেন দিয়েছো। সে বলছে আমার অন্যায় হয়েছে, আমি আর দিবো না।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো.মুনিম আহম্মেদ বলেন, ‘তার সকল কর্মকাণ্ড বিষয়ের উপজেলা বিএনপির সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অবগত। দলের হাইকমান্ডকে সকল বিষয়ে জানানো হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় হাইকমান্ড যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এমারৎ হোসেন বলেন, প্রভাষককে মারধরের ঘটনা সত্যতা আছে। এ ঘটনায় আদালতে একটা মামলা হয়েছে। মামলার কাগজ আসলে আমরা এফআইআর (FIR) করবো।