1. live@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : news online : news online
  2. info@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : দৈনিক অনলাইন তালাশ পর্ব ২১ :
রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৭:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
চন্দনাইশ পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদকের বড় ভাইয়ের সহধর্মিণী ও গনতান্ত্রিক ছাত্রদল ৮নং সাধারণ সম্পাদকের মমতাময়ী আম্মার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ  বান্দরবানে মারাইংতং এ বৌদ্ধ জাদীর মূর্তি ভাংচুর লামায় পুলিশের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, ডাকাতির সরঞ্জাম, নগদ টাকা উদ্ধার ও মাস্টারমাইন্ড করিম গ্রেফতার ঝগড়ার জেরে ঘুমন্ত বড় ভাইকে ছোট ভাই স্ত্রী সহ মিলে খুন  কালীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান আজাদ ফারুক উদ্দিন আহমেদের জানাজার নামাজে হাজার হাজার মুসল্লীর ঢল থানচিতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার  কলেজছাত্র সাব্বির হত্যার খুনিদের গ্রেফতারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, থানার সামনে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট সহচর প্রমাণ হওয়ার পরও বহাল তবিয়তেই আছেন এনআরবি ইসলামী লাইফের চেয়ারম্যান কিবরিয়া ও তার স্ত্রী হোসনে আরা  বান্দারবানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের অভিযানে 8 রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার সমুদ্র সৈকতে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিলো আমেরিকান সেনা ও বিমানবাহিনী

পতেঙ্গা সৈকতে অবৈধ দোকানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিএনপি ও আত্মগোপনে থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা

সাইদুর রহমান
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

সাইদুর রহমান

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের প্রবেশপথেই কয়েকশ দোকান। ওয়াকওয়েতে দাঁড়িয়ে সমুদ্রপানে তাকালে মনে হবে পাড়া-মহল্লার কোনো বস্তি। দর্শনার্থীদের বসার জন্য যেখানে ছিল রঙ-বেরঙের ব্লক; সেই ব্লকের ওপরেও তৈরি হয়েছে দোকান। আর এসব দোকান ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চলছে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বাণিজ্য। গত ৫ আগস্টের আগে এসব দোকানের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে। তবে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে এখন সেই অবৈধ দোকানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিএনপির ও আত্মগোপনে থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।

ছুটির দিন কিংবা অবসরে নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যান হাজারো পর্যটক। সৈকতের সৌন্দর্য দেখতে গিয়ে তারা ফিরে আসেন তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে। অধিকাংশ পর্যটকের অভিযোগ—তারা সৈকতে কেবল প্রশান্তির খোঁজে যান। তবে সেখানে গিয়ে এমন সারি সারি দোকানের ভিড়ে তারা আসল সৌন্দর্যই উপভোগ করতে পারেন না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারাবার আগে এসব দোকানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিল থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ সভাপতি মাসুদ করিমের হাতে। প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ভুঁইফোড় ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবী সমবায় লিমিটেড’ সমিতির ব্যানারে দৈনিক দোকান ভেদে ১শ’ থেকে ৩শ’ টাকা তুলতেন তিনি। তার অধীনে ছিল একটি সিন্ডিকেট। এছাড়া মাসুদের বাবা নুর মোহাম্মদ এবং ওয়াহিদুল আলম ওরফে ওয়াহিদ মাস্টারও এসব চাঁদার ভাগ পেতেন।

মাসুদ করিম মূলত চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের মদদপুষ্ট ছিলেন। সাবেক এই এমপির প্রশ্রয়েই পতেঙ্গাজুড়ে চলতো মাসুদের অত্যাচার। গত ১৯ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা এলাকা থেকে পতেঙ্গা থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মাসুদকে গ্রেপ্তার হয়েছিল পতেঙ্গা থানায়

সম্প্রতি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পতেঙ্গা সৈকতের মূল পয়েন্ট থেকে বালুচরে দিকে নামতে ওয়াকওয়েতে রয়েছে নৌকা, দোলনাসহ ৮ থেকে ১০টি রাইড। এছাড়া পতেঙ্গা সৈকত ঘেঁষা ‘চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড’ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো ফুলের গাছ ও বাগান নষ্ট করে তৈরি করা হয়েছে অন্তত পাঁচ শতাধিক দোকান।

সৈকতের মূল পয়েন্ট থেকে সৈকতে নামতে ওয়াকওয়ের দুই পাশের প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটারজুড়ে খাবার, খেলনা, ঝিঁনুক, চা, আচার, কসমেটিক্সসহ নানা ধরনের শত শত দোকান। এসব দোকান ত্রিপল, বাঁশ এবং টিন দিয়ে তৈরি করা। আর এসবের ফলে শ্রী হারিয়েছে সমুদ্রপাড়। দোকানগুলোর ফলে সংকীর্ণ হয়ে গেছে দর্শনার্থীদের হাঁটাচলার পথ।

এদিকে, সমুদ্রপাড়ের রেলিংয়ের সামনে বসানো হয়েছে রঙ-বেরঙের চেয়ার। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো ফুলের গাছ ও বাগান নষ্ট করে গড়ে ওঠা দোকানের দোকানিরাই বসিয়েছেন এসব চেয়ার। সেখানে খাবার অর্ডার করা ছাড়া বসতে দেওয়া হয়না দর্শনার্থীদের। পর্যটকদের বসার জন্য সিমেন্ট দিয়ে যেসব রঙ-বেরঙের ব্লক তৈরি করা হয়েছিল—সেসব ব্লকও দখল হয়ে গেছে দোকানের বর্ধিত স্থাপনায়।

ডবলমুরিং এলাকা থেকে সৈকতে দুই শিশুসহ বেড়াতে আসা লাবণী আক্তার নামে এক পর্যটক বলেন, ‘বন্ধের দিনে বাবুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। বন্ধের দিনে একটু নির্মল হাওয়ার জন্য সমুদ্র সৈকতই শ্রেষ্ঠ পর্যটনকেন্দ্র। কিন্তু এখানে অনেক বছর ধরেই দোকানপাটে ভরে গেছে। আগে কিন্তু এমন ছিল না। আগে সব দোকান ছিল মূল সড়কের দিকে। আর সমুদ্র ছিল খোলামেলা।’

পার্শ্ববর্তী কাটগড় এলাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া সোহাগ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় যেভাবে সৈকত দেখেছি এখন সেরকম নেই। এখন পুরো সৈকত দখল করে বাণিজ্য করার পাঁয়তারা করছে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। এক দল গিয়ে এখন আরেক দল খাচ্ছে। কিন্তু পতেঙ্গা বীচের বিষফোড়া এসব দোকান উচ্ছেদ হচ্ছে না। আমাদের স্থানীয়রাও ভাগ-বাটোয়ারার দ্বন্দ্বে ব্যস্ত। এগুলো প্রশাসন দেখে না। কারণ তাদের পকেটেও টাকার অংশ যায়।’

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দোকানগুলো থেকে চাঁদা নেওয়া না হলেও রাইডগুলো থেকে প্রতি সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। আগে এই চাঁদার টাকার টাকার ভাগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদের আন্ডারে , থানা পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের পকেটে গেলেও এখন সীমাবদ্ধ বিএনপির গুটিকয়েক নেতাকর্মীদের মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পতেঙ্গা থানা কৃষকদলের সভাপতি নাছির, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাবুদ্দিন, সদস্য নেজাম বর্তমানে পতেঙ্গা সৈকতের অবৈধ দোকান বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। আর তারা সবাই নগর কৃষকদলের আহ্বায়ক মো. আলমগীরের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। এদের মধ্যে ইসমাইল সৈকত নিয়ন্ত্রণের মূলহোতা। ইসমাইলের সৈকতে কাঁকড়া এবং মাছের ব্যবসা রয়েছে। আর প্রায় সন্ধ্যার পর তার দোকানেই এই সিন্ডিকেটের মিটিং হয়।

অন্যদিকে, বর্তমানে পতেঙ্গা সৈকতের এসব অবৈধ দোকান বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ মো. আলমগীরের অনুসারি হিসেবে পরিচিতদের কব্জায় হলেও এসব দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ডেইলপাড়া এলাকায় আরেক বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী আলী আজম। আলমগীর গ্রুপের সাথে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত কেন্দ্রিক বিভিন্ন অবৈধ বানিজ্য নিয়ে আলী আজম গ্রুপের সাথে দ্বন্দ্ব ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত ১ অক্টোবর দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে জাহাজে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে।

পতেঙ্গা থানা বিএনপি’র সভাপতি নুরুল আবছার সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আমি ৫ আগস্টের পর সৈকতে গিয়ে সবাইকে বলে এসেছি কেউ চাঁদা চাইলে তাকে বেঁধে রাখবেন আপনারা। আমি যতটুকু জেনেছি, নগর কৃষকদলের আহ্বায়ক আলমগীর গ্রুপ এবং ডেইলপাড়ার বিএনপির আজম গ্রুপ ওখানে নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে। আর এসব নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে আজ (মঙ্গলবার) দ্বন্দ্বও হয়েছে। তবে আজমের পদ-পদবি নেই। আমি এসবের প্রতিবাদও করেছি।’তাইও আওয়ামী লীগের নেতা মাসুদের নির্দেশে গোলমাল মারামারি সৃষ্টি হইতেছে দুই গ্রুপের মধ্যে

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর কৃষকদলের আহ্বায়ক মো. আলমগীর সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আমার নাম করে চাঁদাবাজির সুযোগ নেই। আমি উল্টো সৈকতের সব দোকানিকে বলে দিয়েছি যেন কেউ চাঁদা চাইলে আমাকে জানায়। আর আগে যারা চাঁদাবাজি করতো তাদেরকেও উচ্ছেদ করে দেওয়ার পরও করতে পারি নাই কয়েকজন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা এর মধ্যে এক নাম্বার গডফাদার মাসুদ । কেউ আমার নাম করে চাঁদা নিয়েছে এমন প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান সিভয়েস২৪কে বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত পতেঙ্গা সৈকতে চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ পাইনি। সৈকতের জায়গা মূলত সিডিএ’র। তাদেরকে বারবার বলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে। আমরা তাদের উচ্ছেদ কার্যক্রমের সময় সাহায্য করবো আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়। কেউ উচ্ছেদের উদ্যোগ নিচ্ছে না। এগুলো অবৈধ সব। উচ্ছেদ করে দিলেই ঝামেলা শেষ।’

‘নতুন কোনো চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলে কেউ অভিযোগ করলে তাকে আমরা গ্রেপ্তার করে চাঁদাবাজির মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নেব। আইনগতভাবে এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’— যোগ করেন ওসি।

অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদের বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সিভয়েস২৪কে বলেন, ‘আমাদের নতুন চেয়ারম্যান মহোদয় এসেছেন ওনাকে জানানো হয়েছে। উচ্ছেদের জন্য ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে আজ থেকে দুইমাস আগে। পুলিশ সদস্যের সংকট ছিল বলে উচ্ছেদ করা যায়নি। আগামী সপ্তাহে হয়তো উচ্ছেদের প্ল্যান নেওয়া হতে পারে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে কালকেই আলাপ করেছি। এক দখলদার গিয়েছে, আরেক দখলদার এসেছে। এজন্য আমাদের দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে। এটা আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে প্রথমদিনেই ব্রিফ দিয়েছি। তিনিও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© www.dainikonlinetalaashporbo21.com