1. live@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : news online : news online
  2. info@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : দৈনিক অনলাইন তালাশ পর্ব ২১ :
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বালু নিলাম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। বাংলার ঐতিহ্য মৃৎ শিল্প পুনরুদ্ধারে কালীগঞ্জে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন ইউএনও তনিমা আফ্রাদ কালীগঞ্জে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১১ লাখ টাকার চেক ও ৫ লক্ষ্য টাকার সঞ্চয়পত্র বিতরণ চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবিতে মদন উপজেলা প্রশাসনের প্রতি বিনীত আহ্বান , যুব অধিকার পরিষদ এর সভাপতি মোঃ কামাল উদ্দিন চন্দনাইশ পৌরসভা মেয়র হতে চেয়ে পৌরসভা এলডিপির সভাপতি আলহাজ্ব এম আইনুল কবিরের মামলা নরসিংদীর ঘোড়াশালে প্রান আরএফএলের কাভার্ডভ্যান চালককে গুলি করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের  দবীতে মানববন্ধন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে চট্টগ্রাম হাটহাজারী ঐতিহাসিক তিনটি দিঘী পু:নখননের উদ্যোগ র‍্যাবে কর্মরত এএসপি পলাশ সাহা গুলিবিদ্ধ লোমহর্ষক মৃত্যু  গোদাগাড়ী উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েকটি বেকারীতে পরিদর্শন

বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের সারিতে কুড়িগ্রামের রিকতা

 সুব্রত বাবু সিক্রেট
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

সুব্রত বাবু সিক্রেট

রিপোর্টার বিবিসি ২০২৪ সালের জন্য বিশ্বের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর যে তালিকা প্রকাশ করেছে সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম জেলার একমাত্র নারী রিকতা আখতার বানু। রিকতা আখতার বানু কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা সরকার বাড়ি গ্রামের আবু তারিক আলমের সহধর্মিণী। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে তানভীর দৃষ্টিমনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। রিকতা আখতার বানুর এলাকায় প্রতিবন্ধী শিশুকে অভিশাপ হিসেবে দেখা হয়। তার মেয়ে প্রতিবন্ধী ও সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। মেয়েকে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। কিন্তু মেয়ে প্রতিবন্ধী বলে শিক্ষকরা তাকে কটূক্তি করতেন, এমন আচরণে তিনি কষ্ট পান। এরপর জমি বিক্রি করে নিজের মেয়ে ও সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন বিদ্যালয়। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে তোলেন ‘রিকতা আখতার বানু (লুৎফা) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’। ২০০৯ সালে ২৬ শতক জমিতে নিজের অর্থায়নে দোচালা একটি টিনের ঘর তোলেন। শুরুতে চারজন শিক্ষক ও ৭৩ শিক্ষার্থী নিয়ে তার স্বপ্নের যাত্রা শুরু হয়। বিদ্যালয়টিতে এখন ৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। শুরুতে অটিস্টিক বা শেখার অক্ষমতা আছে, এমন শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হলেও, এখন বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে এমন শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। রিকতার এমন উদ্যোগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তিনি বিদ্যালয়ের স্লোগান দিয়েছেন, ‘ প্রতিবন্ধীরা আমাদেরই স্বজন, এদের সহানুভূতি নয় সহযোগিতা করুন। রিকতার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক তুহিন বলেন, আমরা খুবে আনন্দিত যে বিশ্বের ১০০ জনের যে তালিকা বিবিসি প্রকাশ করেছে, সেখানে আমাদের বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আছেন। প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-কর্মচারীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। প্রধান শিক্ষক শাহিন শাহ বলেন, বিবিসির প্রকাশিত ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র আমাদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা রিকতা আখতার বানু একজন। এ জন্য আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। আমরা তার সাফল্য ও উন্নতি কামনা করছি। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু তারিক আলম বলেন, আজ প্রভাবশালীর তালিকায় রিকতা আখতার বানুর নাম এসেছে, এ জন্য সভাপতি হিসেবে আমি আনন্দিত। তিনি নিজের মেয়েসহ প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে নিয়ে দুঃখ-কষ্ট বুকে ধারণ করেছেন। যেভাবে পথ চলেছেন এবং সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। রিকতা আখতার চিলমারী সরকারি হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কাজ করেন। সেখানেও রোগীদের সঙ্গে খুবই আন্তরিক ব্যবহার ও সেবা দিয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিপা আক্তার বলেন, রিকতা আখতার বানু নার্স হিসেবেও খুবই ভালো। রোগীদের সঙ্গে খুব আন্তরিক। তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে নিজেকে খুব উৎফুল্ল মনে হচ্ছে। বিবিসির প্রকাশিত তালিকায় নিজের নাম থাকায় অনুভূতি প্রকাশ করে রিকতা আখতার বলেন, আমার মেয়েকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিয়েছিলাম। সেখান থেকে শিক্ষকরা তাকে বের করে দেয় এবং প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকবার অপমান করে। পরপর তিনবার যখন এ ঘটনা ঘটে, তখন আমার কষ্ট হয়। তারপর আমার মেয়ের জন্য স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করে একটা স্কুল করার চেষ্টা করি। আমার মেয়েসহ ৮ থেকে ৯ বাচ্চা নিয়ে স্কুল শুরু করি। কিন্তু স্কুল করতে গিয়ে দেখি সেখানে ৭৩টি প্রতিবন্ধী বাচ্চা। পরে তাদের নিয়ে স্কুল শুরু করি। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ১০০ নারীর তালিকায় আমাকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আমি কল্পনা করতে পারিনি যে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এবং আমার প্রতিবন্ধী মেয়ে দৃষ্টিমনির কারণে আমি আজ এখানে। আজ আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন। এভাবে সম্মানিত হয়েছি, এই আনন্দ ধরে রাখা বা বলার মতো ভাষা নেই। আমি সমাজের প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে যেতে চাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© www.dainikonlinetalaashporbo21.com