আনিছুর রহমান নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রামঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম তৈলারদ্বীপ সেতুর উপর নতুন করে টোল আরোপের সরকারি সিদ্ধান্তে স্থানীয় জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নতুন টোল হারের বিষয়ে আগামী ৩০ শে জুলাই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অংশীজনি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ইতিমধ্যে ঘোষনা করা হয়েছে। তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। একদল যেখানে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি এবং সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে টোলকে যৌক্তিক মনে করছেন, সেখানে আরেকদল এটিকে সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি বোঝা হিসেবে দেখছেন।সরকার পক্ষ এবং টোলের পক্ষের ব্যক্তিরা বলছেন, তৈলারদ্বীপ সেতু দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে ভুগছিল। টোল আদায়ের মাধ্যমে যে রাজস্ব আদায় হবে, তা সেতুর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার এবং ভবিষ্যতে এর আধুনিকায়নে ব্যয় করা হবে। তাদের মতে, এটি সেতুর স্থায়িত্ব বাড়াবে এবং এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে। এছাড়া, তারা যুক্তি দিচ্ছেন যে, দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেতুতেই টোল আদায় করা হয় এবং এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।অন্যদিকে, টোলের বিপক্ষে থাকা সাধারণ জনগণ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বাঁশখালী একটি কৃষিপ্রধান ও মৎস্যনির্ভর এলাকা। এই সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য কৃষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। নতুন টোল তাদের দৈনন্দিন ব্যয় বাড়িয়ে দেবে, যা সরাসরি পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, যারা প্রতিদিন একাধিকবার সেতু পার হন, তাদের উপর এটি বড় ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, সাধারণ জনগণের উপর বাড়তি বোঝা না চাপিয়ে কি অন্য কোনো উপায়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানো যেত না?জনদুর্ভোগের আশঙ্কা স্থানীয়দের মতে, টোল আদায়ের ফলে বাঁশখালী থেকে চট্টগ্রাম শহর এবং অন্যান্য উপজেলায় যাতায়াত আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানো কিংবা কৃষিপণ্য দ্রুত বাজারে নিয়ে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে একটি সুষম সমাধান বের করবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বাঁশখালী’র সাধারণ মানুষ।টোলের হার সহনীয় পর্যায়ে আনা অথবা নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর জন্য ছাড়ের ব্যবস্থা করার বিষয়ে তারা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। এই বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে আরও আলোচনা ও বিতর্ক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তৈলার দ্বীপ সেতুটি দেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু, যা আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়ন এবং বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের সংযোগকারী একটি অবকাঠামো। এটি সাঙ্গু নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে। স্হানাক ২২°১০’২৪” উত্তর ৯১°৫৪’৪০”পূর্ববহন করে যানবাহন ও পথচারী অতিক্রম করে। দৈর্ঘ্য ৫১২ মিটারের সেতুটিতে নির্মাণ ব্যায় হয়েছিল ৩২ কোটি টাকা চালু হয়েছে ২৯ আগস্ট ২০০৬ ইং তারিখে। নির্মাণ পরবর্তী সেতুটিতে সরকার রাজস্ব আদায় করে আসছে। রাজস্ব আদায়ের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল পরিবহনযাত্রী ও পথচারি গত জুলাই আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে জনরোষের মুখে সেতু টির রাজস্ব আদায় থেকে বিরত থাকে সরকার। গতকাল ২৭শে জুলাই ২০২৫ ইং তারিখে সেতুটিতে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বিজ্ঞপ্তি প্রচারে পরবর্তী থেকেই শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা ঝড়। এ নিয়ে একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজচ্ছেন সেতু দিয়ে যাতায়াতকারি জনপরিবহন যাত্রীসাধারণ।